জয়পুরহাটে ১৩ বছর বয়সী মাদ্রাসা ছাত্র নিঝুম নিখোঁজ, ১০ দিনেও খোঁজ মেলেনি
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় নিঝুম (১৩) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নিখোঁজ হওয়ার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। সন্তানকে খুঁজে না পেয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন তার বাবা-মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
নিঝুম জয়পুরহাট সদর উপজেলার কোমর গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে। সে তার বাবার প্রথম পক্ষের সন্তান। প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর মোজাম্মেল ছেলেকে নিজ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন, যেখানে নিঝুম দ্বিতীয় মায়ের সাথে এবং দাদা-দাদির সঙ্গে থাকতো।
প্রায় সাত মাস আগে নিঝুমকে বড়তারা ইউনিয়নের দারুল উলুম হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়। পড়াশোনার সুবিধার্থে সে স্থানীয় শহিদুল ইসলামের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত। প্রতি সপ্তাহের ছুটিতে সে বাড়ি যেত এবং ছুটি শেষে আবার মাদ্রাসায় ফিরে আসত।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২৭ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে ছুটি শেষে বাবার সঙ্গে মাদ্রাসায় ফেরে নিঝুম। কিন্তু ওই দিন বিকাল ৩টার পর থেকে তাকে আর সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যায় বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পরিবারের সদস্যদের জানায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো খোঁজ মেলেনি।
ঘটনার দুদিন পর, ২৯ এপ্রিল নিঝুমের বাবা ক্ষেতলাল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে, ২ মে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় পত্রিকায় নিঝুমের সন্ধানে বিজ্ঞাপন দেয়।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, ২৭ এপ্রিল বিকেলে বগুড়া-জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের নিশ্চিন্তা বাজার এলাকায় একটি শপিং ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় নিঝুমকে।
এ বিষয়ে নিঝুমের বাবা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, “সকাল ১০টায় ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়ে আসি। সন্ধ্যায় জানতে পারি, তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দশ দিন হয়ে গেল, কিন্তু এখনো কোনো খবর পাইনি।”
মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা দেলোয়ার হোসেন জানান, “ঘটনার দিন জোহরের নামাজ পর্যন্ত সব ছাত্র মাদ্রাসায় ছিল। তবে মাগরিবের নামাজের সময় নিঝুমকে পাওয়া যায়নি। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারকে জানিয়ে দিই এবং মাদ্রাসা কমিটির পক্ষ থেকেও খোঁজখবর চালানো হচ্ছে।”
ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপেন্দ্র নাথ সিং বলেন, “ঘটনার পরপরই একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। নিঝুমকে উদ্ধারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”
মতামত দিন